স্টাফ রিপোর্টার :
দেশের বন্যা পরিস্থিতি এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতদের শোক বিবেচনায় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা থেকে বিরত থেকেছে বিএনপি। দলের নীতি নির্ধারকদের এই সিদ্ধান্তকে সময় উপযোগি হিসেবে দেখছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে নিজেদের অনুভূতিও প্রকাশ করেছেন নেতারা। জানিয়েছেন নিজেদের প্রত্যাশার কথাও।
তারা বলছেন, বিগত প্রায় ১৭ বছরের স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি মিললেও বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সকল পর্যায়ে কাঙ্খিত সংস্কারের মাধ্যমে একটি সুখী—সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে নির্বাচিত সরকার ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করছেন নেতারা।
জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, আমাদের দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান সাহেবের ঘোষণা অনুযায়ী দেশের গণঅভ্যুত্থানে হতাহত এবং বর্তমান বন্যার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সকল কর্মসূচি আমরা বাতিল করেছি। এই মুহুর্তে আমাদের কর্মসূচি হলো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাদেরকে ত্রান সহায়তা প্রদান করা। পাশ^র্বর্তী দেশ ভারত পরিকল্পিত ভাবে দেশের মানুষকে বিপদে ফেলেছে। তাদের কারণেই দেশের মানুষ এখন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ। আসলে বিএনপি শান্তিপ্রিয় দল। শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং জনকল্যানে আমরা সবসময়ই নিয়োজিত ছিলাম। বিএনপি মানুষের জন্য কাজ করে। সেই প্রমাণ বিএনপি আবারও রেখেছে। আমরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি বাতিল করে বন্যা কবলিত মানুষের সহায়তার জন্য হাত বাড়িয়েছি। জেলা ও থানাসহ অন্যান্য সকল ইউনিট কমিটির নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যেই ত্রান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক বিএনপি নেতা মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। আমরা সম্মিলিত ভাবে আরও ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে যাবো।’
গোলাম ফারুক খোকন বলেন, দেশের চলমান প্রেক্ষাপটে আমরা প্রত্যাশা রাখি যে, অন্তর্বর্তীকালিন সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। যেই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে এবং মানুষ তাদের ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার নির্বাচিত করবে। আমরা প্রত্যাশা করছি যে, বিএনপি মানুষের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করে দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাবে।’
গোলাম ফারুক খোকন আরও বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব স্পষ্ট ভাবে বলেছেন যে, দলে কোনো অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা দেয়া হবে না। কাউকে সহযোগিতা করা হলে বহিস্কার করা হবে। রূপগঞ্জে আমরা দুইজনকে বহিস্কার করেছি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ষড়যন্ত্র চলছে। হিন্দুরা মন্দির ভেঙ্গে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেছে। চারিদিক থেকে ষড়যন্ত্র চলছে। আনসার বাহিনীকে মাঠে নামানো হয়েছিল, হাইকোর্টে অস্থিরতা তৈরী করা হয়েছিল। ক্যু করার ষড়যন্ত্র চালানো হয়েছে। আসলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে ছেড়ে যায়নি। তিনি শত নির্যাতনের পরও দেশের মানুষের পাশে ছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে ঠিক করা এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ বিগত সরকার দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। অর্থনৈতিতে সমৃদ্ধি আনতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সকল পর্যায়ে সংস্কার করে একটি সুখি সমৃদ্ধি দেশ গড়তে কাজ করবে বিএনপি— সেই প্রত্যাশা আমাদের।’
ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ যেমন দলের মূল কর্ণধার তারা প্রত্যেকেই শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতিত হয়েছে। আমরা চাই নতুন করে দেশ গড়তে গিয়ে, দল গড়তে গিয়ে মানুষের ভিরে যেন এই সকল নির্যাতিত—নিপীড়িত মানুষ যেন হারিয়ে না যায়। নির্যাতিত মানুষগুলো যেন দলের হাল ধরতে পারে। যেন সকল নির্দেশনা মেনে সলকে সুসংগঠিত করতে পারে। পাশাপাশি মানুষের আশা আকাঙ্খা এবং সেই চিন্তা ধারাকে লালন করে জনগণ এবং দেশের সেবায় সমানতালে আমরা কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ। যাতে দলও শক্তিশালী হয়, মানুষের চাহিদাও পূরন হয়, দেশকে নতুন ভাবে যেন মানুষ উপভোগ করতে পারে।’